গরমে রান্না করা খুব কষ্টকর কাজ। কিছু নিয়ম মেনে গরমেও আরামে রান্না করতে পারবেন। পরামর্শ দিয়েছেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের গৃহব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিনা আখতার। লিখেছেন ফাতেমা ইয়াসমীন
কখন রান্না করবেন
গরমে রান্নাঘরে আরাম পেতে সবার আগে মাথায় রাখুন কখন রান্না করবেন। দুপুর ১২টায় রান্না করতে গেলে গরম বেশি লাগবেই। সবচেয়ে ভালো হয় যদি সকালেই দুপুরের খাবারটা রান্না করে ফেলেন। দুপুরবেলা চটজলদি গরম করে নিলেই হলো।
আগে গুছিয়ে রাখা
রান্নার কাটাবাছার কাজটা আগের দিন রাতে করে রাখতে পারেন। এতে দিনের গরমটা ফাঁকি দেওয়া যাবে। রান্নার আগেই আরামদায়ক কোনো জায়গায় অথবা ফ্যানের নিচে বসে কাটাবাছার কাজটা করে ফেলতে পারেন। এই গরমে রান্নাঘরে দিনের বেলা যত কম থাকবেন ততই গরমে কম কষ্ট পাবেন।
রান্নার যন্ত্রপাতি যেন আধুনিক হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন
রান্নাঘর এখন আগের থেকে অনেক বেশি আধুনিক। খুব কম সময়ে যেন রান্নার কাজ সেরে ফেলা যায় এমন অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম পাওয়া যায়। যেমন—টোস্টার, গ্রিল, বৈদ্যুতিক কুকার ইত্যাদি ব্যবহার করে কম সময়ে খুব সহজে খাবার রান্না করতে পারেন। যেগুলোতে টাইমার দেওয়ার অপশন আছে সেগুলোতে টাইম সেট করে আপনি রান্না থেকে বের হয়ে আরাম করতে পারেন।তা ছাড়া গ্যাসে রান্না করার সঙ্গে সঙ্গে আঁচের গরম হাওয়া এতে পাবেন না। ফলে গরম অনেক কম লাগবে।
রান্নাঘরের লাইট অফ রাখুন
রান্নাঘরে এমনিতেই সারা দিন তাপ উত্পন্ন হয়। আর রান্নাঘরে যদি অযথা লাইট জ্বলে থাকে, তাহলে তা আরো তাপ উত্পন্ন করবে। দিনের বেলা রান্নাঘরে লাইট না জ্বালিয়ে চেষ্টা করুন প্রাকৃতিক আলোয় রান্নাঘরের কাজ করতে।
খেয়াল রাখুন বাতাস চলাচলেরও
রান্নাঘরে যাতে প্রয়োজনীয় বাতাস চলাচল করে তা অবশ্যই খেয়াল রাখুন। রান্নাঘর ঠাণ্ডা রাখতে হলে সেখানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকা খুবই জরুরি। এর জন্য রান্নাঘরের জানালা খোলা রাখুন এবং এক্সস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন। আজকাল রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক ফায়ারপ্লেস ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে রান্নাঘরের তাপ বের হয়ে যায়।
রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখুন
রান্নাঘরে রান্নার সময় অনেক ধরনের জিনিসের দরকার পড়ে। একটি জিনিস ব্যবহার শেষে সেটি নির্দিষ্ট স্থানেই তুলে রাখুন। মসলার কৌটা, ডাল, তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ প্রয়োজনীয় পণ্য, জুসার, ব্লেন্ডার, ওভেন, ছুরি, কাঁচি সুন্দর করে সাজিয়ে রাখুন, যাতে কাজের সময় সহজেই পাওয়া যায়, বেশি ছোটাছুটি করতে না হয়। এত গরম ও ক্লান্তি দুটিই কম লাগবে।
খোলামেলা রান্নাঘর
খেয়াল রাখুন যাতে রান্নাঘরে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসটিই থাকে। অনেকে নানা ধরনের পুরনো জিনিস দিয়ে রান্না রান্নাঘরটিকে গুদামঘর বানিয়ে ফেলেন, এতে রান্নাঘরে একটা গুমট ভাব দেখা দেয়। রান্নাঘরের পরিবেশও নষ্ট হয়। রান্নাঘরের পরিবেশের সঙ্গে রান্না করার আরামের একটা বিষয় আছে।
বেশি আঁচে রান্না নয়
চুলার আঁচ খুব বেশি বাড়িয়ে দিয়ে রান্না করা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে রান্নাঘর খুব দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আবার রান্নাটাও সুসিদ্ধ হয় না। তাপ এড়াতে খুব কম আঁচে রান্না করা যায় এমন খাবার রাখুন মেন্যুতে।
প্রয়োজন নিজের প্রতি যত্নের
রান্নাঘরে যখন রান্না করতে যাবেন তখন নিজের জন্য কিছু বিষয় মাথায় রাখুন। সুস্থ থাকতে হবে আর যতটা পারা যায় গরমটাকে এড়িয়ে রান্নায় মন দিতে হবে। তার জন্য রান্নায় যাওয়ার আগে মুখে সানস্ক্রিন মাখুন। রান্নার ফাঁকে ঠাণ্ডা ফলের জুস পান করতে পারেন। ক্ষণিকের বিরতি নিয়ে অন্য ঘরে ফ্যানের নিচে বসতে পারেন। লেবুপানি পান করলেও আরাম পাবেন রান্নার সময়। মাঝেমাঝে মুখে পানির ঝাপটা দিন, গরম কম লাগবে।
Source: https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2023/05/29/1284577